Tuesday, April 10, 2018

কী দেখার কথা, কী দেখছি ?? আজকের এই বাংলাদেশে

কী দেখার কথা, কী দেখছি ??

ছোটবেলায় বাজানের কাছে পুঁথি শুনেছিলাম—
"লাখে লাখে পড়ে লাশ কাতারে কাতার !
গুনিয়া দেখিল তাহা ৭০ হাজার ৷"
বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধার পরিমাণ নিয়ে কতই রঙ তামাশা ! এরশাদ চাচার আমলে ছিল ৮০ হাজারের কিছু অধিক, বেগম জিয়া রাজাকার, আলবদর, আল শামস আত্মীয়-স্বজন প্রভৃতি জোড়াতালি দিয়ে দুই লক্ষ পার করলেন ৷ পরবর্তিতে খাঁটি দেশপ্রেমীক দল আওয়ামীলীগ যুদ্ধোত্তর জন্ম নেওয়া আরও কিছু নব্যমুক্তিযোদ্ধার সমন্বয় ঘটিয়ে তালিকা তিন লাখের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেল; আর তাদের জন্য সকল ক্ষেত্রে বরাদ্দ ৩০% কোটা ! মারহাবা !!

এখন প্রশ্ন হচ্ছে—১৯৭১ সালে যুদ্ধ চলাকালীন যে ৩০ লক্ষ লোক শহীদ হয়েছিল, তাহলে তারা কারা ? তারাও নিশ্চয়ই দেশের জন্যই জীবন দিয়েছিল ? তাদের পরিবার-পরিজনরা কেন কোনো কোটাভিত্তিক সুযোগ-সুবিধা পাবে না?

ইনু বাবাজি ছাত্রজীবনে কী চমৎকার শ্লোগান দিতেন—
"কেউ খাবে কেউ খাবে না,
তা হবে না ! তা হবে না !!"
এক অর্থে আজ তাই হচ্ছে ! বিতর্কিত প্রায় দুই লক্ষ মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিপুতি কিংবা বংশধর যদি প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কোটার সুবিধা ভোগ করতে পারে, তবে ৩০ লক্ষ শহীদ পরিবারের অসহায় লোকজন কেন তাতে শামিল হতে পারবে না ? নাকি "৩০ লাখ" সংখ্যায় শুভঙ্করের ফাঁকি; মানে কোনো গড়বড় আছে ?

প্রবাদ আছে—
"সাথে থাকলে সঙ্গী, না থাকলে জঙ্গী ৷" অগ্নীকন্যা মতিয়া চৌধুরী আপামর জনতাকে ঢালাওভাবে রাজাকার বললেন, অথচ বিশুদ্ধ মুক্তিযোদ্ধার দল এর কোনোই প্রতিক্রিয়া দেখালো না ! তবে কী ১৭ কোটির মধ্যে ৩ লাখ বাদে বাকি সবাই রাজাকার ?
কী আশ্চর্য কথা রে বাপু ?

আমি দেশের একজন সাধারণ নাগরীক হিসেবে কোটাধারী মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের কাছে সবিনয়ে জানতে চাই— পাকিস্তানীদের বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আপনাদের পূর্বপুরুষরা হলেন দেশপ্রেমীক ! বেশ ভালো কথা ৷ বলি, একটি স্বল্প আয়ের ১৭ কোটি অধিবাসীদের দেশে মুষ্টিমেয় মানুষের জন্য ৫৫% কোটা পদ্ধতি—এটা কি বৈষম্য নয় ? এই অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বললেই রাজাকার ?
এর জবাব কী দেবেন ??

যারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছে তাদের আজ কোন কৌটা দিয়েছে কি? 
তাহলে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন জিহাদি এর পরিবার কেন দিন মুজুরি করে খায়? তাহলে প্রকৃত কৌটা কে পাচ্ছে? আসুন আমরা সবাই একতা বদ্ধ হই। উন্নত সমাজ গড়ে তুলি। তাহলে আমরা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারব।